গাইবান্ধা জেলা নিয়ে তথ্য বহুল একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপস তৈরি করেছেন নাজমুল হাসান নামের এক পুলিশ সদস্য। ‘আমাদের গাইবান্ধা’ নামের অ্যাপসটিতে মিলবে গাইবান্ধা জেলা সম্পর্কিত সমুদয় তথ্য।

অ্যাপসটিতে ঢুকে দেখা যায়, গাইবান্ধা জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য, ভৌগোলিক সীমারেখা, গাইবান্ধার সাতটি থানা ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের মোবাইল নাম্বার, শতাধিক ডাক্তারের চেম্বার ঠিকানা, অ্যাম্বুলেন্স, ব্লাড ব্যাংক ও ব্লাড ডোনারদের গ্রুপ ভিত্তিক তালিকা ও মোবাইল নাম্বার, জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য, গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতের আইনজীবীদের মোবাইল নাম্বার, বাস কাউন্টারের তথ্য, ট্রেনের সময়সূচি, বিদ্যুৎ অফিস, হাসপাতালের ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার, গাইবান্ধা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলোর ওয়েব সাইট ঠিকানাসহ জেলা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সব সেবাই সুবিন্যস্ত আকারে সাজানো হয়েছে। বর্তমানে অ্যাপসটি প্লে-স্টোরে প্রকাশিত অবস্থায় রয়েছে। তাই যে কেউ চাইলে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ইংরেজি ভাষায় (Amader Gaibandha) লিখে সার্চ দিলে অ্যাপসটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

অ্যাপসটির উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামের জব্বার আলীর ছেলে। নাজমুলের পরিবার জানায়, স্থানীয় রহমতপুর এমএম উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও তুলশীঘাট শামসুল হক ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান শাখা থেকে এইচএসসি পাশের পর পুলিশে যোগ দেন নাজমুল।

আরো পড়ুনঃ শীতে গরম পানিতে গোসল করলে ভয়ঙ্কর বিপদ

এরপর গাইবান্ধা সরকারি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও পরে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা। চাকরিতে যুক্ত হওয়ার পর উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ বাধাগ্রস্ত হলেও নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে জাগ্রত রেখেছিলেন নাজমুল।
সম্প্রতি গুগল থেকে ক্লিয়ারেন্স পাওয়ায় প্লে স্টোর থেকে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনেই অ্যাপসটি ডাউনলোড করে অফলাইন ও অনলাইনে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।

নাজমুল হাসানের স্কুল শিক্ষক রহমতপুর মঞ্জুর মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন সরকার বলেন, নাজমুল ছোট থেকেই ছিল বুদ্ধিদীপ্ত। নম্র ও ভদ্র স্বভাবের নাজমুল লেখাপড়াতেও বেশ মনোযোগী ছিল। তার এই সাফল্যে শিক্ষক হিসেবে আমি নিজেও গর্বিত।

অ্যাপসটির উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান বলেন, ছোট থেকেই বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আমার অনেক আগ্রহ ছিল। গাইবান্ধা জেলা নিয়ে একটি তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করতে চেয়েছিলাম। ডিউটি শেষে বাসায় ফিরে এসে আমি অ্যাপস তৈরিতে সময় ব্যয় করতাম। প্রথমবার চেষ্টা করে কিছু ত্রুটির কারণে ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয়বার আবার চেষ্টা করে সফল হই। অ্যাপসটিতে আরও নতুন কিছু তথ্য সংযোজন করতে হবে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সম্পূর্ণ কাজটি শেষ হবে। নিজের কাজের ফাঁকে তাই যতটুকু সময় ছিল সেই সময়ে বিশ্রাম না নিয়ে অ্যাপস তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে ছিলেন তিনি। অবশেষে চেষ্টা আর পরিশ্রমের ফসল হিসেবে একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করতে সক্ষম হয় নাজমুল।

হঠাৎ এমন চিন্তা কীভাবে মাথায় এলো জানতে চাইলে নাজমুল বলেন, আমি দেখেছিলাম একজন ডাক্তারের সিরিয়াল কিংবা ব্লাড ডোনার খুঁজতে গিয়ে মানুষ অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। ট্রেনের সময়সূচি না জানা, বাস কাউন্টারের নাম্বার না থাকা, পুলিশ স্টেশনের নাম্বার না থাকাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য না জানায় সাধারণ মানুষদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয়। এসব ভাবনা থেকেই আমি এই অ্যাপসটি তৈরি করেছি। আমার বিশ্বাস অ্যাপসটির মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীরা সুফল পাবে।

Social Share This Story, Choose Your Platform!