বিপিএলের এবারের আসর শুরুর আগে শীর্ষ রানস্কোরার কে হবেন, সেই তালিকায় অনেকেই তামিম ইকবালকে রাখলেও সেখানে তাওহীদ হ্রদয়ের নাম ছিল কিছুটা কমই। টুর্নামেন্টের প্রথম কয়েকটি ম্যাচের পরও এই ডানহাতি ব্যাটার সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে নিজেকে মেলে ধরেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এই ব্যাটার। আর ফরচুন বরিশালকে ফাইনালে নিয়ে আসার পথে তামিম ব্যাট হাতে নিজেকে চিনিয়েছেন নতুন করে। ফাইনালের মঞ্চে লড়াইটা তাই দুই দলের সেরা দুই ব্যাটারেরও, কারণ আসরের সর্বোচ্চ রানস্কোরার হওয়ার যুদ্ধটা যে এখন কেবল তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

বরিশাল দলে এবার বসেছে দেশি-বিদেশি তারকাদের হাট। ব্যাটিং লাইনআপটাও বেশ লম্বা। তবে তামিমে ব্যাটে চড়েই দলটা পাড়ি দিয়েছে এতোটা পথ। শুরু থেকে ছন্দে থাকা এরই মধ্যে খেলে ফেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনিংস। রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে রান তাড়ায় করেন ফিফটি। সেই ধারা বজায় রেখে এলিমিনেটর ম্যাচে ফের জ্বলে ওঠেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার৷ করেন আরেকটি ফিফটি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে অবশ্য হাসেনি তার ব্যাট, তবে অন্যদের সম্মিলিত প্রয়াসে তাতে কোনো সমস্যা হয়নি।

এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪৫৩ রান করেছেন তামিম। একবার থেকেছেন অপরাজিত। স্ট্রাইক রেট ১২৫.৪৮, গড় ৩৪.৮৪। সর্বোচ্চ ৭১। ফাইনালে শীর্ষস্থান ধরে রাখার পাশাপাশি ভালো একটা শুরু এনে দেওয়ার দায়িত্বটা থাকবে তার ওপরই।

আরো পড়ুনঃ চোখের জলে বুয়েট শিক্ষার্থী লামিসাকে শেষ বিদায়

তামিমের ওপর বরিশালের নির্ভরতা যেমন, আন্তর্জাতিক সব বড় বড় তারকা দলে থাকার পও কুমিল্লার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই তাওহীদের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে রান তাড়ায় ঝড়ো এক ফিফটির পর তো সেটা আরও বেড়ে গেছে। সেদিন এমন সব চোখধাঁধানো শট খেলেছেন, যা বলে দেয়, ফর্মের তুঙ্গে থাকার পাশাপাশি আত্নবিশ্বাসে বলিয়ান হয়েই ফাইনালে নামবেই এই তরুণ ব্যাটার।

তামিমের চেয়ে একটি ম্যাচ কম খেলে ৪০.৬৩ গড়ে তাওহীদের রান ৪৪৭। স্ট্রাইক রেটটা দুর্দান্ত, ১৪৯.৪৯। ফিফটি করেছেন দুটি, আর সেঞ্চুরি একটি৷ সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৮। সর্বোচ্চ রানস্কোরারদের তালিকায় তামিমের পরেই তার অবস্থান।

আসরের শেষের দিকে এসে যে ছন্দে আছেন তাওহীদ, তাতে বরিশালের বোলারদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠতেই পারেন তিনি।

তামিম ও তাওহীদ, বড় ম্যাচে দুজনই পরীক্ষিত খেলোয়াড়। ২০১৯ সালের বিপিএলের ফাইনালে এই কুমিল্লার বিপক্ষেই তামিম খেলেছিলেন মাত্র ৬১ বলে ১৪১ রানের এক ইনিংস, যা দলটিকে শিরোপা এনে দিয়েছিল সেবার। আর চলতি আসরে অন্যতম ফেভারিট রংপুরের বিপক্ষে কোয়ালিফায়ারে ৪৩ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে তাওহীদও জানান দিয়েছেন, বড় মঞ্চের চাপ তিনি ভালোই নিতে পারেন।

দলগত লড়াইয়ের মধ্যে তাই দর্শকদের চোখ থাকবে এই দুই বাংলাদেশের ব্যাটারের মধ্যে সর্বোচ্চ রানস্কোরার হওয়ার লড়াইয়ের দিকেও। ম্যাচের ফলাফলেও যা রাখতে পারে বড় ভূমিকা।

Social Share This Story, Choose Your Platform!