মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় যানবাহনসহ ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা ফেরি থেকে গত দুইদিনের অভিযানে কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধারকারী জাহাজ।

গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালের এই ঘটনার পর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম দুই দিনে (বুধ-বৃহস্পতিবার) দুটি ট্রাক ও একটি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে। এতে তেমন একটা ফল না আসায় শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) কাজে যোগ দেয় শক্তিশালী জাহাজ প্রত্যয়। কিন্তু পরবর্তী দুই দিনে তিনটি জাহাজ মিলে ডুবে যাওয়া ফেরির কোনো কিছু উদ্ধার করতে পারেনি।

এর আগে, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিটি বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরি ঘাটের অদূরে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে নোঙ্গর করা অবস্থায় ছোট-বড় ৯টি যানবাহন এবং চালক-হেলপারসহ ২১জন নিয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ন কবির নিখোঁজ আছেন।

আরো পড়ুনঃ এআই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ২ লাখ জেতার সুযোগ।

ঘটনার দুই ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার কাজে যোগ দেয় ৬০ টন ওজন তোলার ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। ওইদিন উদ্ধার হয় একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক। পরের দিন উদ্ধার কাজে যোগ দেয় আরও একটি ৬০ টন ওজন তোলার ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। এদিন একটি ট্রাক উদ্ধার করেই দিন পার হয়ে যায়। গতকাল এই দুটি জাহাজের সঙ্গে কাজে যোগ দেয় ২৫০ টন ওজন তোলার ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়।

কিন্তু পরবর্তী দুদিনে (শুক্র-শনিবার) নদীর তলদেশে থেকে তিনটি উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়, হামজা ও রুস্তম কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি। উদ্ধার কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নিখোঁজ ফেরির দ্বিতীয় মাস্টার হুমায়ুন কবীরের পরিবার।

নিখোঁজ হুমায়ুন কবীরের ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, চারদিনেও তারা আমার ভাইকে তারা উদ্ধার করতে পারল না। আমাদের পরিবারের সদস্যরা তাকে ফিরে পাবার প্রহর গুনছেন। কিন্তু উদ্ধার কাজে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। দু’দিনে একটি গাড়িও উদ্ধার করতে পারেনি। উদ্ধারের নামে তার কী করছে? আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। আমার ভাইকে খুঁজে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন।

অন্যদিকে, নদীতে তলিয়ে যাওয়া ট্রাকের মালিকরাও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা উদ্ধার কাজ গতি বাড়ানোর দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ফেরিতে ডুবে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার কাজ শুরু করে এবং ঘটনার দিন একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার আরও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়। গতকাল ও আজ কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্মিলিতভাবে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Social Share This Story, Choose Your Platform!